বিচ্যুতি = সংকেত

এক

সববিছু স্বাভাবিকই ছিলো। ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে মেয়েটা অনেক রাত জাগে আর প্রচুর মোবাইলে কথা বলে। প্রশ্ন করলে বলে, “কেমিস্ট্রি নিয়ে বন্ধুর সাথে আলাপ করতে ছিলাম”। স্বাভাবিক আচরণের এই বিচ্যুতিকে সংকেত বলা হয়। মেয়েটার আচরণ সংকেত দিচ্ছে যে সে হয়তো প্রেমে পড়েছে অথবা শেয়ার না করার মতো অন্য কোনো সমস্যার মধ্যে আছে!

দুই

দীর্ঘ পতন অথবা আড়াআড়ি অবস্থান করতে করতে হঠাৎ করেই একদিন শেয়ারটির দর ৫%-৬% বেড়ে গেলো। এই যে এই বিচ্যুতি – এমন হলে সেটা হবে সংকেত। এই সংকেত পেয়ে শেয়ারটির প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হয়। হয়তো দেখা যাবে কয়েকদিনের মধ্যেই দর বাড়তেই থাকবে।

তিন

অনেকদিন ধরেই প্রায় একই ভলিউ্যমে লেনদেন হচ্ছে। হঠাৎই একদিন ভলিউ্যম বেড়ে গেলো। এটা সংকেত। শেয়ারটি পতন ধারায় থাকলে সেখান থেকে দর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে আর ঊর্ধ্বমূখী অবস্থানে থাকলে সেখান থেকে দর পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

দর বাড়লে ভলিউ্যম বাড়ে আর দর কমলে ভলিউ্যম কমে এটা স্বাভাবিক। অনেক দর বাড়লে অনেক ভলিউ্যম বাড়ে এবং অনেক দর কমলে ভলিউ্যমও অনেক কমে, এটা স্বাভাবিক! কিন্তু এর ব্যতিক্রম হলেই সেটা বিচ্যুতি বা সংকতে। অর্থাৎ দর কমে গেলো কিন্তু ভলিউ্যম অনেক বেড়ে গেলো কিংবা দর বেড়ে গেলো কিন্তু ভলিউ্যম অনেক কমে গেলো, এটা ব্যতিক্রম বা বিচ্যুতি তথা সংকেত! কতগুলো উদাহরণ দিয়ে দেখা যাক!

উদারহণ: INTECH

দুই একটি ছোট ছোট বুলিশ ক্যান্ডলস্টিক তৈরি হলেও INTECH শেয়ারটি আসলে দীর্ঘ পতনে ছিলো। ১০ জুলাই ২০১৮ তে হঠাৎ অনেক বড় ভলিউ্যম হলো সেই সাথে দরটাও প্রায় ৫% বাড়লো। এটা ছিলো প্রথম সংকেত। কিছুদিন পর থেকে সেই এমন বড় বড় ভলিউ্যম হতে থাকলো। অর্থাৎ ঐ ভলিউ্যম হয়ে গেলো স্বাভাবিক। টানা বাড়তে বাড়তে ২০ টাকার শেয়ারটি ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে ৭৪.৫ টাকা স্পর্শ করলো। ঐদিন দেখা যায় ঐ ৭৪.৫ টাকা থেকে পড়তে পড়তে ৬.৯.৪ টাকায় পড়ে গিয়ে লেনদেন শেষ হলো। অর্থাৎ ঐদিন দর পড়ে গেলো অথচ অন্য যে কোনো দিনের চেয়ে ভলিউ্যম অনেক বেড়ে গেলো। অর্থাৎ আবার বিচ্যুতি বা সংকেত। সেখান থেকেই দর পড়েছিলো।

তবে এই বিচ্যুতি বা সংকেতের আগে আরও একটি সংকেত ছিলো। সহজ সংকেত! দর যেদিন ৫৬ টাকায় পৌঁছুলো সেদিন খবর এলো অ্যামাজনের সাথে ব্যবসায়ীক চুক্তি হয়েছে। ঐদিন শেয়ারটি তার ডেঞ্জার জোনে ঢুকে পড়েছিলো। হল্ট হতে হতে তৃতীয় দিন থেকে টানা পতন!

উদাহরণ ২: EGEN

২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে লেনদেন শুরু হয়ে টানা বিক্রেতাশূন্য! এতদিন কোনো সংবাদ আসেনি। হঠাৎ ৩ মার্চ থেকে শোনা যাচ্ছে আগামী ৪ বছর এই কোম্পানিটি কোনো বোনাস দিতে পারবেনা। BSEC এর এই ধরণের শর্তগুলো সাধারণত আইপিও অ্যাপ্রুভালের আগেই দেয়া হয়। তবে এখন কেনো শর্ত বা এখন কেনো সংবাদ? এটা বিচ্যুতি। তথা সংকেত!

চিত্রে দেখা যাচ্ছে লেনেদেনের শুরু থেকে টানা ৫ দিন Four Price Doji ক্যান্ডলস্টিক তৈরি হয়ে ৬ষ্ঠ দিনে অন্যরকম। এটাও বিচ্যুতি বা প্রথম সংকেত। অর্থাৎ এখান থেকে ডেঞ্জার জোনে ঢুকে পড়লো। ডেঞ্জার জোনে ঢুকে পড়ার পরেও কিন্তু টানা কয়েকদিন হল্ট হতে হতে বাড়তে পারে। এখানেই High Risk, High Gain!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *